ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের “কম্পিটিশন”

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীণ কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতায় বাস্তবায়নাধীন “স্কিলস এন্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট” এর উদ্যোগে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে “স্কিলস কম্পিটিশন ২০১৫” এর চূড়ান্ত পর্ব (জাতীয় পর্যায়) আজ (শনিবার) রাজধানীর ইন্সটিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) ভবনে অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী দীপক কুমার শীল, মো: সোহেল রানা, আনোয়ার হোসেন তাদের উদ্ভাবিত “নেবুলাইজার ও সাকশন মেশিন” শীর্ষক প্রকল্পের জন্য প্রতিযোগিতায় ১ম পুরস্কার লাভ করেন। প্রতিযোগিতায় “ব্রিকফিল্ড কার্বন ফিল্টার” শীর্ষক প্রকল্পের জন্য ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ৩জন শিক্ষার্থী মুহসিন আহমাদ, মোঃ নাছির আহম্মেদ পাটোয়ারী, শারমিন খান সুরমি ২য় পুরস্কার এবং “রুম সিকিউরিটি কন্ট্রল সার্কিট” শীর্ষক প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ৩ জন শিক্ষার্থী মো: জাকারিয়া মাহাবুব, শেখ জুবায়ের আহমেদ, মো: সারোয়ার হোসেন ৩য় পুরস্কার লাভ করেন। ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান লাভকারী শিক্ষার্থীদের পুরস্কার হিসেবে, ল্যাপটপ, ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব নুরুল ইসলাম নাহিদ, এমপি প্রধান অতিথি হিসেব উপস্থিত থেকে দিনব্যাপী এই স্কিলস কম্পিটিশনের উদ্বোধন করেন। এর আগে তিনি স্কিলস কম্পিটিশন ২০১৫ উপলক্ষে আয়োজিত একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালিতে অংশগ্রহণ করেন। র‌্যালিটি জাতীয় জাদুঘর প্রাঙ্গণ থেকে যাত্রা করে মৎস ভবন হয়ে আইডিইবি ভবনে এসে শেষ হয়। উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধান অতিথি বলেন, দারিদ্র দূর করার অন্যতম হাতিয়ার হচ্ছে কারিগরি শিক্ষা। বর্তমান সরকার দেশকে দারিদ্রমুক্ত করতে শিক্ষা বিস্তারে অন্যান্য কর্মসূচীর পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষাকে যথেষ্ট অগ্রাধিকার প্রদান করেছে। সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করার ফলে দেশ আজ নিন্ম মধ্য আয়ের মর্যাদা লাভ করেছে। তিনি আরো বলেন, শিক্ষা একটি অগ্রাধিকারের বিষয়। আর কারিগরি শিক্ষা হলো অগ্রাধিকারযুক্ত বিষয়গুলোর মধ্যে অগ্রগণ্য। তিনি ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত সম্পদশালী দেশে রূপান্তরে বর্তমান সরকারের অঙ্গীকারের বিষয়টি পুণর্ব্যক্ত করে বলেন, দেশের বিদ্যমান সম্পদের সর্বোচ্চ সদ্ব্যব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের দেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় সম্পদ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, উপযুক্ত পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মেধা ও সৃজনশীলতার বিকাশের সুযোগ তৈরি করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত সচিব জনাব মো: সোহরাব হোসাইন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব জনাব আশোক কুমার বিশ্বাস এবং স্বাগত বক্তব্য দেন স্কিলস এ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব জনাব মো: ইমরান। স্কিলস কম্পিটিশন ২০১৫ উপলক্ষে দুপুরে আইডিইবি ভবনের মুক্তিযোদ্ধা অডিটোরিয়ামে “TVET for Employment and Sustainable Development” শীর্ষক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী উক্ত সেমিনারেও প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত জ্যেষ্ঠ সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত সচিব জনাব মো: সোহরাব হোসাইন। সেমিনারে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব এবিএম খোরশেদ আলম, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ন্যাশনাল স্কিলস ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল সেক্রেটারিয়েট, বেগম সামসুন্নাহার, মহাপরিচালক, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো, ড. মো: মোখলেছুর রহমান, সিনিয়র অপারেশন্স অফিসার, বিশ্বব্যাংক, ড. মো: মোস্তাফিজুর রহমান, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এবং জনাব একেএমএ হামিদ, সভাপতি, ইন্সটিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্কিলস এ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব জনাব মো: ইমরান এবং স্বাগত বক্তব্য দেন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব জনাব আশোক কুমার বিশ্বাস। স্কিলস কম্পিটিশিন-২০১৫ মোট ৩টি পর্যায়ে (প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়, আঞ্চলিক পর্যায় ও জাতীয় পর্যায়) আয়োজন করা হয়েছে। চলতি বছরের ১৭ অক্টোবর দেশের ৯২টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে প্রতিযোগিতার ১ম পর্ব একযোগে অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন এবং তাঁরা প্রায় ১৮০০ উদ্ভাবন/প্রকল্প মূল্যায়নের জন্য উপস্থাপন করেন। গত ২১ নভেম্বর ২০১৫ প্রতিযোগিতার ২য় ধাপে দেশের ১১টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ১ম পর্যায়ের প্রতিযোগিতা থেকে নির্বাচিত ২৭৬টি প্রকল্প নিয়ে আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এ পর্ব থেকে নির্বাচিত মোট ৫০টি প্রকল্প বা উদ্ভাবন আজ জাতীয় পর্যায়ের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। অনুষ্ঠানমালার শেষে ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে খ্যাতনামা শিল্পীগণ সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন। কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে একটি বিশেষ গম্ভীরাও পরিবেশন করা হয়।