সাইবার ক্রাইম প্রতিকারে চাই সাইবার পুলিশের এক ভারচুয়াল ওয়ান স্টপ সাভির্স !

সাইবার ক্রাইম প্রতিকারে চাই সাইবার পুলিশের এক ভারচুয়াল ওয়ান স্টপ সাভির্স !

১৯৭০ দশকে আমেরিকাতে ক্যাপ’ন ফ্রেঞ্চ নামে একটা খাবার বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। একবার ক্যাপ’ন ফ্রেঞ্চের নির্মাতারা তাদের পন্যের প্রচার কৌশল হিসেবে এর প্যাকেটের ভিতরে একটি খেলনা হুইসেল দেয়া শুরু করে। জন ড্রেপার নামক ব্যিক্ত খেয়াল করেছিল যে, একটি সক্রিয় টেলিফোন কল শেষ হলে টেলিফোন এক্সেঞ্জ থেকে যে স্বয়ংক্রিয় শব্দটি প্রদান করা হয় তার সাথে এই হুইসেলের হুবহু মিল আছে। সে কল করার পর নির্দিষ্ট একটি সময়ে ওই হুইসাল দিয়ে শব্দ করতো যা থেকে এক্সেঞ্জ মনে করতো কলটি বোধয় শেষ হয়েছে। কিন্তু যেহেতু কলটি ছিল ড্রেপারের বানানো তাই বাস্তবে কলটি শেষ হত না। তাই হুইসেল বাঁজাবার পরে ড্রেপার ইচ্ছে মত কথা বলতে পারতো এবং এর জন্য তাকে বাড়তি কোন বিল দিতে হত না। হ্যাকিংএর আদি পিতা ছিল এই জন ড্রেপার। শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ে ড্রেপার আর, সাজা হিসেবে তাকে দুই মাস জেলে কাটাতে হয়। হ্যাকিং এর জগতে আরেক অন্যতম বিখ্যাত হ্যাকার হচ্ছে কেভিন মিটনিক। ১৯৮১ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে হ্যাকিং এর ভূবনে পদার্পন করে মিটনিক। প্রথমে টুকটাক হ্যাকিং করলেও সিরিয়াসলি হ্যাকিং শুরু করে ১৯৮৩ সালের দিকে। সে সময়ে ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ক্যালোলিনার ছাত্র ছিল সে। একদিন ইন্টারনেটে পূর্বসুরি আরপানেটে অ্যাকসেস পেয়ে যায় মিটনিক আর আরপানেট যেহেতু মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের একটি নেটওয়ার্ক ছিল সেহেতু মন্ত্রনালয়ের সকল স্পর্শকাতর সকল ফাইল দেখার সুযোগ পেয়ে যায় কেভিন মিটনিক। তবে সে কখনো এই ফাইল গুলোর অপব্যাবহার করে নি। পেন্টাগনের গোপন ফাইলে ঘুরে বেড়ানো ছিল তার শখের মতোই। কিন্তু এভাবে আর বেশিদিন চলে নি, আরপানেট-এর সিস্টেম এ্যাডমিন-রা টের পেয়ে যায় মিটনিকের অস্তিত্ব। অবৈধ ভাবে কম্পিউটার সিস্টেমে প্রবেশ করার অপরাধে গ্রেফতার করা হয় তাকে এবং পাঠানো হয় সংশোধন কেন্দ্রে।

বাংলােদেশের ডিজটাল বাংলােদেশে রুপান্তরের ধারায় যে সাইবার ক্রিমিনালিটির ধারা বৃদ্ধি পাচ্ছে বা পাবে সে আশঙ্কা স্বাভাবিক ভাবে করা যায়। তাই এ ব্যপাের শক্তিশালী এবং কার্যকর প্রস্তুিত জরুরি।আমার মোবাইল ফোনটি পকেটমারের পর সে ব্যাপারে জিডি সংক্রান্ত ব্যাপারের বিড়ম্বানা ব্যপারগুলো সংক্ষিপ্তিই ছিল, কিন্তু সময় মুটামুটি দীর্ঘদিন ঘরিয়ে গেলও এখন পর্যন্ত আমার মামুলি স্মার্টফোনটির কোন হদিস নেই। আমি যতদুর জানি ইএমই কোড দিয়ে  মোবাইলসেট বেড় করে ফেলা সম্ভব এবং এ বেপারে অনেকেই আমাকে আশ্বস্ত করেছিল এবং আমিও আমার মতো একজন ভিক্টিমকেও এব্যপারে আশ্বস্ত করেছিলাম। আমাদের তথ্য প্রযুক্তিগত ব্যাবহারিক প্রসারের ফলে, আমরা তথ্য নিয়ে তুলকালাম কান্ড ঘটিয়ে ফেলতে পারি, বিশেষ করে জনসচেতনতা সৃষ্টির ক্ষেত্রে। বিভিন্ন বিধি নিষেধের বাণি – বা প্রাথমিক উপায় হিসেবে কি তথ্য কাজে লাগবে; তা এখন সহজেই প্রচারকরা যায়।  বাস্তবিক ভাবে এইসব তথ্য আসলে কতটুকু প্রভাব ফেলছে বা কর্যকর?

বাংলােদেশ জনসাধারনেক  সাইবার ক্রাইম প্রতিকারের জন্য প্রথমেই থানায় সাধারণ ভাবেই সাধারণ ডায়রি করতে হয়। বিশেষ ক্ষেত্রে সাইবার ক্রাইমের অভিযোগ মুলত BTRC অ্যাকশান নিয়ে থাকে। এছাড়া অভিযোগ গুলো সমাধানে তৈরী হয়েছে বাংলাদেশ কম্পিউটার সিকিউরিটি ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (CSIRT) যাদের মূল কাজ হলো রাষ্ট্রীয়, সমাজ, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ায়- ওয়েবসাইটগুলোতে এমন বিষয় সনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া এবং আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে সর্বক্ষণ এ নজরদারি করা। বাংলাদেশে সাইবার ক্রাইম সম্পর্কিত অপরাধ দমন এর জন্য সংশ্লিষ্ট আইন টিও অনেকের জানা নাই। বাংলাদেশে সাইবার অপরাধের প্রধান আধেয় হলো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম, বিশেষ করে ফেসফবুক৷ বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সাইবার হেল্প ডেস্ক-এর তথ্য অনুযায়ী, শতকরা ৭০ ভাগ অভিযোগই আসে নারীদের থেকে৷এ মুহূর্তে বাংলাদেশে সাইবার অপরাধের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮১ মিলিয়ন ডলার রিজার্ভ চুরি৷ শুধু বাংলাদেশ কেন, পৃথিবীর প্রায় সব প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যমই গুরুত্বের সঙ্গে এই সাইবার ডাকাতি নিয়ে খবর পরিববেশন করেছে, করছে৷ এই অপরাধে জড়িত চক্রটি আন্তর্জাতিক হলেও, এর সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক বা বাংলাদেশের কেউ জড়িত থাকার বিষয়টি উড়িয়ে দিচ্ছে না তদন্তকারীরা৷

আমার মোবাইলফোনের চুরির ব্যপারটি একটি সাধারন চুরির ঘটনা, কিন্তু এটাকে সমাধান করতে সাধারণ পুলিশিং এখন আর প্রযোজ্য না, প্রয়োজন সাইবার পুলিশিং (আইনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য যারা মুলতো ভারচুয়াল  অপরাধগত তথ্যর উৎস খুজে বেড় করবে)। তাহলে ব্যাপারটি কি দাড়ালো! সাইবার পুলিশিং সাইবার ক্রাইম ছাড়াও অন্যান্য অপরাধ নির্মুলের ক্ষেত্রেয় বিশেষ গুরত্বপূর্ন ভুমিকা রাখতে পারে। কাজেই সাইবার পুলিশিং সিস্টেম অপরাধ দমনে একটি গুরত্বপূর্ন উপাদান। স্পেশাল এলিট টিমের মতো একটি সুদক্ষ সাইবার এলিটফোর্স গঠনের সময় এখনি। সাইবার এলিটফোর্সের প্রস্তুতি বিভিণ্ন মাত্রার একীভূত রপে রুপায়ণ করাও জরুরি।  সাধারণ জনগন বা ভিক্টিম প্রতিকারের জন্য সর্বপ্রথম যেখানে ফোন করে বা ইমেইল করেই তার জেনারেল ডায়রি করবে , কাগজ কলম নিয়ে থানায় থানায় ঘুরবে না। যে এলিটি ফোর্সে থাকবে তীব্র অ্যানালাইটক্যাল অ্যাবিলিটির ক্রিমিনোলজিস্ট, ইনভেস্টিগেটর, সাইবার কাউন্সিলর, ইথিক্যাল হ্যাকার, পাবলিক কানেক্টর  সহ নানান স্কিল্ড মানুষদের সমন্বয়।