দুর্নীতির আখড়া ঘাটাইল ভুমি অফিস!

দুর্নীতির আখড়া ঘাটাইল ভুমি অফিস!

“৩৮ টাকা জমির খাজনা দিতে ঘুষ দিতে হয়েছে ৩৬০০ টাকা ”

১। ১০০ টাকা ভুমি অফিস এর সহকারী কমিশনার আম্বিয়া সুলতানার পিয়নকে
২। ৩৫০০ টাকা জামুরিয়া ইউনিয়ন এর নায়েব জহুরুল ইসলাম তালুকদারকে

সোনার বাংলায় সোনা কেন ফলেনা তার একটি চিত্র মাত্র!

জমি বিক্রি করার জন্য দুই সপ্তাহের ছুটি নিয়ে ১৪ই মে দেশে যাই। সকল কাগজপত্র প্রস্তুত করে দেখি জমির খাজনা বাকি। কি আর করা, ২১ই মে দৌড় জামুরিয়া ভুমি অফিস।

নায়েব সাহেব দাবি করলেন ৫০০০ টাকা!
এদিকে আমার ফ্লাইট ২৮ই মে, কোন উপায় না দেখে রাজী হলাম ৩০০০ টাকা দিতে, তখন নায়েব সাহেব বললেন, না হবেনা।
আপনারা সহকারী কমিশনার আম্বিয়া সুলতানার কাছ থেকে অনুমুতি নিয়ে আসেন।

এবার জামুরিয়া থেকে ১০ কিমি. দূরে ঘাটাইল ভুমি অফিসে ম্যাজিস্ট্রেট এর কার্যালয়ে। ম্যাজিস্ট্রেট আম্বিয়া সুলতানাকে প্রবাসী বলা মাত্রই উনি একটা দরখাস্ত লিখে আনতে বললেন। দরখাস্ত আনা মাত্রই সাইন করে দিলেন এবং নায়েবকে ফোন করে বলে দিলেন যেন খাজনা রশিদ দিয়ে দেয়।

মাঝে সহকারী কমিশনার পিয়নকে একটা ফাইল ভেরিফাই করতে বললেন, আর শুরু হয়ে গেল! দিলুম ১০০ বিডিটি।

চিকুনগুনিয়া এবং ৩৫-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় যেখানে বাচা দায়, সেখানে আবার দৌড় জামুরিয়া।
এবার নায়েব যা করলেন সেটা ইতিহাস।

আগের নায়েব কিছু একটা ভুল করে গেছেন সেটার জন্য, তিনি খাজনা রশিদ না দিয়ে, খাজনার বিশাল বিশাল তিনটি তথ্যভাণ্ডার নিয়ে জামুরিয়া থেকে আবার ঘাটাইল ম্যাজিস্ট্রেট এর কার্যালয়ে।
এরপর ম্যাজিস্ট্রেট বললেন ২ দিন পরে আসেন। জাতি নির্বাক!
দুই দিন পর ২৪ই মে নায়েব আবার ঘুষ দাবি করলেন। আমি এক টাকাও দিবনা বলে দিলাম এবং ঢাকা চলে এলাম।

২৫ই মে নায়েব ফোন করে বললেন ২৮ই মে সকালে খাজনা রশিদ পাবেন।
যেহেতু ২৮ই মে রাতে আমার ফ্লাইট, তাই আমার বাবা কোন উপায় না দেখে ২৫ই মে নায়েব এর চাহিদামত ৩৫০০ টাকা দিয়ে খাজনা রশিদ বুঝে নেন।

রাজতন্ত্রে রাজার পাওয়ার না থাকলে কি হবে, নায়েব সাহেবদের পাওয়ার কিন্তু ঠিকই আছে।

জয় নায়েব, জয় ঘাটাইল ভুমি অফিস!

অবশেষে ২৭ই মে রাতে আবার ঘাটাইল। ২৮ ই মে দুপুর বারটায় জমি দলিল শেষ করে রাত ৯ টায় ঢাকা এবং ভোর ৪ টায় এয়ারপোর্ট, পরদিন ২৯ই মে জার্মানী।

শানে নুযূলঃ সরকারকে ৩৮ টাকা দিতে আমার খরচ হোলও ৩৬০০ টাকা।
এখন একটাই প্রশ্ন – ৩৮ টাকা জমা হয়েছে তো?

থানা নির্বাহী অফিসার এবং সহকারী কমিশনার আম্বিয়া সুলতানার কাছে প্রশ্নঃ
আপনার অধস্তন কর্মচারীদের এই দুর্নীতির দায় ভার কার? জাতি জানতে চায়!